ঢাকা , শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫ , ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
১৪ অঞ্চলে বজ্রঝড়ের শঙ্কা ভারী বৃষ্টির আভাস লালমনিরহাট সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শতাধিক স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিলো দক্ষিণ সিটি খুলবে বাণিজ্যের নতুন দুয়ার আমতলীতে অবৈধ বোমা মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন আমতলীতে সদ্য যোগদানকৃত ইউএনও'র মতবিনিময় সভা আমতলীতে সামুদ্রিক মাছ জব্দ, এতিমখানায় বিতরণ ভূমিকম্পে দ্রুত উদ্ধার-সহায়তায় স্পেশাল ফোর্স গড়েছে ফায়ার সার্ভিস : ডিজি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ আটক ৩ থানায় মামলা ভিসি-প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ করিডর নিয়ে সরকারের অবস্থানের মধ্যে ধোঁয়াশা আছে-আনু মুহাম্মদ মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রসঙ্গ টেলিফোন খরচ সোয়া কোটি উদ্বোধনী ব্যয় ৪৩ লাখ টাকা চট্টগ্রাম বন্দরে যুক্ত হলো সেভেন সিস্টার্সও লাভবান হবে শাহবাগ অবরোধ নার্সিং শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি চরমে ৮ বাস ভরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসে যোগ দিলেন অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ আহত ৫০ প্রশিক্ষণের অভাবে থমকে আছে ব্লক ইটের ব্যবহার গাইবান্ধায় জেগে ওঠা চরের জমি নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, বৃদ্ধ নিহত
জগন্নাথ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

৮ বাস ভরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসে যোগ দিলেন অবস্থান কর্মসূচিতে

  • আপলোড সময় : ১৫-০৫-২০২৫ ০৬:৩৭:০৪ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১৫-০৫-২০২৫ ০৬:৩৭:০৪ অপরাহ্ন
৮ বাস ভরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা এসে যোগ দিলেন অবস্থান কর্মসূচিতে
পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লংমার্চ ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়ার পর কাকরাইলে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা
রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে বিক্ষোভরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন আরও কয়েক শ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। গতকাল বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি বাসে করে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেন এসব শিক্ষক–শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীনও রয়েছেন।
দুপুরে পুলিশের লাঠিপেটা, কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেডের মুখে ছত্রভঙ্গ হওয়ার পর বেলা দুইটার দিকে প্রায় দুই শ শিক্ষার্থী কাকরাইল মোড়ে এসে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকেলে তাদের সঙ্গে ওই সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী এসে যোগ দেন। তারা সবাই নিজেদের দাবির পক্ষে নানা স্লোগান দিচ্ছেন।
বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে আন্দোলন বন্ধ করবেন না তাঁরা। হামলার অনুমতি দেওয়ায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনারের (এসি) বিচারের দাবিও জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
সংঘর্ষে আহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দিন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের হামলার বিচার ও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা এখানে অবস্থান করব।’
এই অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তাজাম্মুল হক বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ হামলা চালিয়েছে। সহকারী প্রক্টরকে পুলিশ আঘাত করেছে। শিক্ষার্থীদের ন্যায্য আন্দোলনে পুলিশ অমানবিক আচরণ করেছে। এর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এখান থেকে যাওয়া হবে না।
এর মধ্যে বিকেল পাঁচটার দিকে উপাচার্যের নেতৃত্বে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় যায়। রাত আটটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাঁরা সেখানে অবস্থান করছিলেন।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করার দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।
ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বরের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু করেন শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। এতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল, ছাত্র অধিকার পরিষদ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারাও অংশ নেন।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে লংমার্চ কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে তাদের বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেন। ঘণ্টাখানেক পর আন্দোলনকারীদের একটি অংশ কাকরাইলে যমুনা অভিমুখী সড়কে এসে অবস্থান নেন। তাঁদের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে যাওয়ার সুযোগ নেই বলে জানান ডিএমপির রমনা বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম। তিনি বলেন, এখানে ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে। আইন ভঙ্গ করলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
যমুনা অভিমুখী লংমার্চে পুলিশের সঙ্গে আহত হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে ৩৬ জন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। চিকিৎসা নিয়ে বিকেলে তাঁরা আবার আন্দোলনে যোগ দিয়েছেন।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, ‘পুলিশ আমার বুকে লাথি মারে। লাঠি দিয়ে ঘাড়ে আঘাতও করে। মেডিকেলে প্রায় দুই ঘণ্টা ছিলাম। ডাক্তার ১০ দিনের বেড রেস্ট (বিশ্রাম) দিয়েছিল। সবাই বাসায় যেতে অনুরোধ করেছিল। কিন্তু বাসায় যেতে মন চাচ্ছে না। আমাদের দাবি আদায়ে সহপাঠীদের সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছি।’
পুলিশের লাঠিপেটায় ডান হাতে ‘ফ্র্যাকচার’ হয়েছে বলে জানান গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মুনতাসির নাদিব সংগ্রাম। তিনি বলেন, ‘সহপাঠীরা আন্দোলন করছেন, আর আমি হাসপাতালে শুয়ে থাকব এটা মানতে পারছি না। তাই অসুস্থ শরীর নিয়ে আবার এসেছি।’
ছাত্রদলের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন বলেন, ‘পুলিশের কাঁদানে গ্যাসের শেল চোখের ডান পাশে লাগে। হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারি, আমাদের ভাইবোনেরা এখনো অবস্থান করছেন। তাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আবার এসেছি।’
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স